বাংলাদেশ ব্যাংক’রে জিগাই, গুগল কি জঙ্গি নাকি???

Google & Bangladesh Bank“বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাকে যদি এই সুযোগে কষায়া থাবড়াইতে পারতাম তাইলে খুব শান্তি পাইতাম।” [লেখাটিতে ইচ্ছাকৃত কিছু কথ্যভাষা ব্যবহার করা হলো]

এই কথাটা কেন বলছি তার ছোট্ট একটা পটভূমি বলি। খুব সংক্ষেপে। আমার কিছু আয়-রোজগার হয় গুগল থেকে। সেই টাকা সরাসরি যায় আমার বৌ’র অ্যাকাউন্টে। কিন্তু সেই টাকা হাতে পেতে তাকে ব্যাংকের দ্বারে-দ্বারে ঘুরতে হয়। সাউথইস্ট ব্যাংক প্রতিমাসে তার ‘বন্ডসই’ টাইপের কিছু একটা নেয়। তা না হলে টাকা দেয় না ব্যাংক। অন্যান্য হয়রানি তো আছেই। কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছে, এটা বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত। সাউথইস্ট ব্যাংকের কিছুই করার নেই।

আমার প্রশ্ন, বাংলাদেশ ব্যাংক কি গুগলকে চেনে না? গুগল কি জঙ্গি নাকি? গুগল কি বোমা বানানোর জন্য টাকা দেয় কাউকে? গুগলকে গুরুত্ব না দিয়ে ‘ডিজিটাল’ বাংলাদেশ করার স্বপ্ন কেউ কীভাবে দেখে আমি বুঝি না। যারা অনলাইন থেকে কিছু টাকা কামানোর স্বপ্ন দেখেন তার সিংহভাগই কোনো না কোনোভাবে গুগল-সম্পৃক্ত। সেই গুগল নামের বিদেশি প্রতিষ্ঠানের টাকা দেশে নিতে আমাদের কতো কষ্ট করা লাগে। কিন্তু ব্যাংকের লোকজনের ব্যবহার দেখলে মনে হয়, বাংলাদেশের আর বৈদেশিক মুদ্রার কোনো দরকার নাই! বাংলাদেশ সুইজারল্যান্ড হইয়া গেছে! সেইজন্যই মনে হয় মতিঝিলে বইসা ওই শয়তানগুলা দেশের শত শত কোটি টাকা বিদেশের চোরদের হাতে তুলে দেয়। অথবা বিদেশি চোরদের সহযোগিতায় নিজেরা মেরে দিছে। আপনারা যে এতো সচেতন, তাহলে টাকা চুরি যায় ক্যামনে? নাকি চোরদের সঙ্গে ভাগবাটোয়ারা করছেন টাকাগুলা? এইজন্যই কইলাম, “বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাকে যদি এই সুযোগে কষায়া থাবড়াইতে পারতাম তাইলে খুব শান্তি পাইতাম।” কারণ তারা কামের কাম করতে পারে না, আকামের বেলায় ওস্তাদ! টাকা চুরি গেছে ৪ ফেব্রুয়ারি কিন্তু মার্চ পার হইয়া যাইবার যোগাড় হইলেও তারা মন্ত্রণালয়কে জানানোর প্রয়োজন মনে করে নাই! ডাল মে কুচ কালা হে নাকি?

কয়দিন আগে আমার জার্মান এক বন্ধুর অ্যাকাউন্ট থেকে বৌ’কে কিছু টাকা পাঠানো হলো। ব্যাংকে গিয়ে বৌকে এমন এমন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হলো, তা শুনে গা জ্বললো। মনে হলো, তাদেরকে যদি শুধু উষ্টাইতে পারতাম! উলরিখ নামের ওই সাংবাদিকের সঙ্গে আমার বৌ’য়ের ‘রিলেশন’ কী, কেন টাকা পাঠাইছে, টাকা দিয়া কী করবেন? — এই জাতীয় প্রশ্নেরও সম্মুখীন হতে হলো। শেষপর্যন্ত আমার আইডি কার্ড, ভিসার কপি ইত্যাদি দিয়ে মুক্তি পাওয়া গেলো! সেসময় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা দয়াপরবশ হয়ে বললেন, আপা, এতো ঝামেলার দরকার কী? আপনার হাজব্যান্ডকে বলবেন, হুণ্ডির মাধ্যমে পাঠাতে। আমার ভাইও তো লন্ডন থেকে হুন্ডির মাধ্যমেই টাকা পাঠায়।

ড. আতিউর স্যারকে সামনে পেলে জিজ্ঞাসা করতাম, বাংলাদেশে কি আসলে ব্যাংকের কোনো দরকার আছে? যদি হুণ্ডির মাধ্যমেই টাকা পাঠালে সুবিধা পাই তাহলে আর ব্যাংকের কী দরকার???

এভাবে যে জনগণের কাছ থেকে উচ্চহারে সুদ নেন, সার্ভিসটা জনগণকে আসলে কী দেন? জার্মানিতে সুদের হার মাত্র ১.৫ শতাংশের মতো। আর আপনারা নেন কমবেশি ১৫-১৬ শতাংশ! আবার আমি যদি ব্যাংকে টাকা রাখতে যাই তাহলে দেন ৫-৭ শতাংশ। কেন??? আবার সেই টাকা যে চুরি যাইবো না সেইটারও গ্যারান্টি নাই। কারণ এর প্রমাণ এরই মধ্যে একাধিক মিলেছে! এটিএম বুথ থেকে টাকা খোওয়া গেছে অনেকের।

ইদানীং ব্যাংকের সুন্দর সুন্দর খবরগুলা শুইনা দূরপরবাশে বইসা আমি যারপরনাই খুশি! এইতো আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশ। ডিজিটাল ব্যাংকিং! [লেখাটি ফেসবুক পোস্ট থেকে নেওয়া, কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *