হাফপ্যান্টের সঙ্গে জ্ঞানের কোনো সম্পর্ক নাই…
ছবির লোকটির নাম ড. ক্লাউস। তিনি জার্মানভাষার অধ্যাপক। তাঁর কাছে আমি জার্মান শেখার চেষ্টা করছি। প্র্রতিদিন একজন মানুষ ৭ ঘণ্টা টানা ক্লাস নেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত। মাঝে শুধু দু’বার ১৫ মিনিট করে বিরতি। সপ্তাহের প্রতিদিনই চলে এভাবে… প্রথমদিনই হালকা একটা ‘টাস্কি খাইলা ’ ৬৩ বছর বয়স্ক এই লোকটার তারুণ্য দেখে। থ্রি-কোয়ার্টার পরে এসেছেন! আমি জীবনে এই প্রথম দেখলাম কোনো শিক্ষক ক্লাসে হাফপ্যান্ট-টাইপ কিছু একটা পরে আসতে পারেন।
যা-ই হোক, ড. ক্লাউসের পড়ানোর স্টাইল আর উদ্যম দেখে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের কথা মনে পড়ে গেলো। আমি পড়তাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। ছোট ছোট পাহাড় আর অরণ্যে ঘেরা সবুজ এই বিশ্ববিদ্যালয়-ক্যাম্পাস থেকে সত্যিকার অর্থে তেমনকিছু পাই নি। অনেকে মিথ্যা বলে। অনর্থক বাড়িয়ে বলে। বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে এই দিয়েছে, সেই দিয়েছে… আসলে বিশ্ববিদ্যালয় কিছু দেয় না। নিজেকে অর্জন করতে হয়।
যদি সত্যি করে বলি, শিখেছি কীভাবে ফাঁকিজুকি দিতে হয়। কীভাবে দলবাজি শিখতে হয়। কীভাবে সহকর্মীদের সঙ্গে ‘কাইজ্যা’ করতে হয়। কীভাবে নারী-পুরুষের মাঝে অনর্থক পার্থক্য করতে হয়। শিখেছি কীভাবে অনর্থক বিষয় নিয়ে ভেবে কাজের কাজটা না করতে হয়।
আমাদের একজন শিক্ষক ছিলেন যিনি পড়ানোর চেয়ে ক্লাসে ছাত্রছাত্রীরা কী পরে এসেছে সেই দিকেই বেশি নজর দিতেন। বলতেন, এই ছেলে, বাংলা সাহিত্যের ছাত্র হয়ে তুমি এটা কী পরে এসেছো। আমার ক্লাসে তো বাপু জিন্স-টিশার্ট চলবে না! তাঁকে স্যার বলা যেতো না। বলতেন, এই ছেলে বাংলার ছাত্র হয়ে তুমি ‘স্যার’ বলছো? একদিন ক্লাসে তিনি রোলকল করছেন। রোলনাম্বার ১৯ পর্যন্ত আসতেই এক ছাত্র বলে ওঠলো ‘ইয়েস স্যার’। (এর আগের সবাই এতোদিনে জেনে গিয়ে শুধু ‘উপস্থিত’ বলা শিখেছে) স্যার এমনভাবে তাকালেন যে পরের জন ভয়ে ভয়ে বললো, জ্বি জনাব। ওই শিক্ষক এমনভাবে তাকালেন,